Friday, December 23, 2011

অন্য মানুষ : শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়


শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (সেপ্টেম্বর ১৫, ১৮৭৬-জানুয়ারি ১৬, ১৯৩৮) জনপ্রিয়তম বাঙালি কথাসাহিত্যিক। বাংলা ছাড়াও তার লেখা বহু ভারতীয় ও বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি কখনো কখনো অনীলা দেবী ছদ্মনামে লিখতেন।
জীবনী :শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর হুগলী জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মতিলাল চট্টোপাধ্যায় ও মাতা ভুবনমোহিনী দেবী। তার মাতুলালয় ছিল হালিশহরে। তার মাতামহ ভাগলপুরের কাছারিতে কেরানির কাজ করতেন। মতিলাল লেখাপড়া শিখেছিলেন, চাকরিও করতেন। সংসারে বারবার অর্থকষ্ট ঘটায় তিনি কন্যা-পুত্র-পত্নীকে নিয়ে ভাগলপুরে শ্বশুরগোষ্ঠীর আশ্রয়ে গেলেন। সেখানে শরত্চন্দ্র তেজনারায়ণ জুবিলী কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৮৯৪ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করে এফএ ক্লাসে ভর্তি হন। ১৮৯৬ সালে অর্থাভাবে পড়াশোনায় ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। শরত্চন্দ্রের সাহিত্য সাধনার হাতেখড়ি হলো ভাগলপুরে। তার অনেক গল্প, যা পরবর্তীকালে প্রকাশিত হয়ে তার যশ বৃদ্ধি করেছে, তার খসড়া এই সময়েই লেখা। যেমন :‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’। কলকাতা থেকে বার্মা (বর্তমান মিয়ানমা)-র যাওয়ার সময় তিনি তার একটি গল্প ‘মন্দির’ কুন্তলীন পুরস্কারের জন্য দাখিল করে যান। গল্পটি প্রথম পুরস্কার পায় এবং কুন্তলীন পুস্তিকামালায় প্রকাশিত হয় বাংলা ১৩১০ সনে। বার্মায় তিনি সাহিত্যসাধনা চালিয়ে যেতে থাকেন। সেখানে লেখা ‘বড়দিদি’ গল্পটি ‘ভারতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বার্মাতে থাকতে শেষের দিকে তিনি ইংরেজি উপন্যাস থেকে কিছু সারবস্তু গ্রহণ করে নিজেই উপন্যাস রচনা করেছিলেন। সেসব উপন্যাসের মধ্যে ‘দত্তা’, ‘দেনাপাওনা’ ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এ ছাড়াও আরও অনেক সমাদৃত উপন্যাস তিনি রচনা করেছেন। মৃত্যুর কিছুকাল আগে তিনি কলকাতায় বালিগঞ্জ অঞ্চলে বাড়ি করেছিলেন। কলকাতাতেই তার জীবনাবসান হয়।
চলচ্চিত্র :তার রচিত ৭টি উপন্যাস—‘দেবদাস’, ‘পরিণীতা’, ‘বিরাজবৌ’, ‘বৈকুণ্ঠের উইল’, ‘বিন্দুর ছেলে’ ও ‘শ্রীকান্ত’ নিয়ে চলচ্চিত্র হয়েছে।
উপন্যাস :‘বড়দিদি’, ‘বিরাজবৌ’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘পরিণীতা’, ‘মেজদিদি’, ‘বৈকুণ্ঠের উইল’, ‘পল্লীসমাজ’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘অরক্ষণীয়া’, ‘পণ্ডিতমশাই’, ‘দেবদাস’, ‘চরিত্রহীন’, ‘শ্রীকান্ত ১’, ‘শ্রীকান্ত ২’, ‘নিষ্কৃতি’, ‘গৃহদাহ’, ‘বামুনের মেয়ে’, ‘দেনা-পাওনা’, ‘নববিধান’, ‘পথের দাবী’, ‘শ্রীকান্ত ৩’, ‘শেষ প্রশ্ন’, ‘বিপ্রদাস’, ‘শ্রীকান্ত ৪’, ‘শুভদা’, ‘শেষের পরিচয়’, ‘দত্তা’।
নাটক :‘ষোড়শী’, ‘রমা’, ‘বিরাজ বৌ’, ‘বিজয়া’।
প্রবন্ধ :‘নারীর মূল্য’, ‘তরুণের বিদ্রোহ’, ‘স্বদেশ ও সাহিত্য’, ‘স্বরাজ সাধনায় নারী’, ‘শিক্ষার বিরোধ’, ‘স্মৃতিকথা’, ‘অভিনন্দন’, ‘বঙ্গ-সাহিত্য’, ‘গুরু-শিষ্য’, ‘সংবাদ’, ‘সাহিত্য ও নীতি’, ‘সাহিত্যে আর্ট ও দুর্নীতি’, ‘ভারতীয় উচ্চ সংগীত’।

No comments:

Post a Comment