Saturday, December 31, 2011

হরমুজ প্রণালি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

strait-of-hormuz









সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে দেশটির ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের বিষয়ে প্রস্তাব করেছে নিয়ে ইরান তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছে, তার ওপর আরও অবরোধ আরোপের চেষ্টা হলে তারা বিশ্বে তেল রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ পথ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেবে ব্যাপারে ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা রহিমি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ‘অবরোধ আরও বাড়লে হরমুজ প্রণালি দিয়ে এক ফোঁটা তেলও যাবে নাদেশটির নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল হাবিবুল্লাহ সায়েরি বলেন, ‘হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়াটা ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এক গ্লাস পানি পানের চেয়েও সহজ কাজ
ইরানের এমন হুঁশিয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, হরমুজ প্রণালি বন্ধে ইরানের কোনো ধরনের তত্পরতা সহ্য করা হবে না হরমুজের মতো একটি আন্তর্জাতিক জলপথে স্বাভাবিক নৌ চলাচলে বাধাদানকারীকে বৈশ্বিক সম্প্রদায় থেকে বের করে দেওয়া হবে
তো এখন কথা হচ্ছে এই হরমুজ প্রণালি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? কী কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইরান প্রণালির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে? আর ইরানকে কোনো দেশ হুমকি দিলেই দেশটি হরমুজকে কেন তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চায়?—এই প্রশ্নগুলোর পেছনে রয়েছে আসলে আন্তর্জাতিক তেল বাণিজ্যে হরমুজ প্রণালির ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান আর তাই হরমুজের গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের তত্পরতা চলছে
  এবার হরমুজ প্রণালি সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়া যাক
হরমুজ প্রণালি হলো ওমান ইরানের মাঝখানে অবস্থিত এক ফালি সরু জলপথ প্রণালি উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় তেল উত্পাদনকারী দেশ সৌদি আরবকে ওমান উপসাগর আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে জলপথটির সবচেয়ে সরু অংশের দৈর্ঘ্য ২১ মাইল এবং প্রস্থ দুই মাইল
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন কর্তৃপক্ষের মতে, ২০০৯ সালে সমুদ্রপথে তেল বাণিজ্যের ৩৩ শতাংশ হয় হরমুজ প্রণালি দিয়ে এর আগে ২০০৮ সালে হয়েছিল ৪০ শতাংশ বাণিজ্য
২০০৯ সালে হরমুজ দিয়ে এক দিনে দেড় কোটি ব্যারেল তেল পরিবাহিত হতো অঞ্চল দিয়ে তেল পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিয়মিত পাহারা দিচ্ছে
হরমুজ প্রণালি দিয়ে পরিবাহিত তেলের বেশির ভাগই যায় এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জাপান তার আমদানিকৃত তেলের তিন-চতুর্থাংশ হরমুজের ওপর দিয়ে নিয়ে যায় আর চীনের আমদানিকৃত তেলের অর্ধেকই আসে হরমুজ প্রণালি হয়ে
হরমুজ দিয়ে প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেলের মতো তেলজাতদ্রব্য রপ্তানি হয়ে থাকে এর সঙ্গে আছে তরলীকৃত গ্যাসও

তেল পরিবহনের বিকল্প পথ
সংযুক্ত আরব আমিরাত হরমুজ প্রণালিকে পাশ কাটিয়ে তেল পরিবহনে সক্ষম এমন একটি পাইপলাইন নির্মাণ করছে আবুধাবিভিত্তিক এই প্রকল্পের পাইপের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৫ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত অপরিশোধিত তেল পরিবহন করা যাবে
ছাড়া এর আগে সৌদি আরবের ওপর দিয়ে ইরাক থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন ১৫ লাখ ব্যারেলেরও বেশি তেল পরিবহন করা হতো লেবাননে পরিবাহিত হতো প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল সৌদি আরবে অপরিশোধিত তেল পরিবহনের জন্য ব্যবহূত পাইপলাইনটির নাম পেট্রলাইন বা ইস্ট-ওয়েস্ট পাইপলাইন
রয়টার্স জানায়, আশির দশকে ইরাক-ইরান যুদ্ধের মতো এবারও হরমুজে ইরানমাইনপুঁতে রাখতে পারে অবশ্য মার্কিন পঞ্চম নৌবহর (বাহরাইনভিত্তিক) উপসাগরীয় অঞ্চল, লোহিত সাগর, ওমান উপসাগর ভারত মহাসাগরের কিছু অঞ্চলে তেলবাহী জাহাজ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সজাগ দৃষ্টি রাখছে
মার্কিন পঞ্চম নৌবহরে ১৫ হাজার সেনাসহ ২০টিরও বেশি জাহাজ, জল স্থলে পারদর্শী বিশেষ সেনা, জঙ্গিবিমান ছাড়াও রয়েছে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত অন্যান্য সহায়ক ইউনিট
অন্যদিকে ২৩টি ডুবোজাহাজ ১০০টির মতো টহল জাহাজ নিয়ে ইরানের নৌবাহিনী গঠিত বিশ্লেষকেরা বলছেন, অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়ে ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের সমান হবে না কিন্তু, গতানুগতিক কৌশলের বাইরে গিয়ে দেশটি ছোট জঙ্গিবিমান নিয়ে মার্কিন নৌবহরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে ছাড়া ইরান অঞ্চলে তার মিত্রদের ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের স্বার্থে আঘাত হানতে পারে

ঘটনাবহুল হরমুজ
১৯৮৮ সালে হরমুজে অবস্থিত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ভিনসেন্স থেকে গুলি করে ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করা হয় এতে বিমানের ২৯০ জন যাত্রীর সবাই নিহত হয় ওয়াশিংটন বলেছিল জাহাজের ক্রুরা ইরানের ওই বিমানটিকে জঙ্গিবিমান ভেবে ভুল করে ওই হামলা চালায় অন্যদিকে তেহরান বলেছিল, ইচ্ছাকৃতভাবে মার্কিন বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছে
২০০৮ সালে ইরানের টহল জাহাজগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র তার যুদ্ধজাহাজের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করে ওই টহল জাহাজগুলো মার্কিন যুদ্ধজাহাজের পাশ ঘেঁষে চলাচলের চেষ্টা করে একই বছর ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মোহাম্মদ আলী জাফরি বলেছিলেন, হামলার শিকার হলে ইরান উপসাগরীয় অঞ্চলের তেল বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রুট বলে বিবেচিত হরমুজ পারস্য উপসাগরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে
২০০৮ সালের জুলাই মাসে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির প্রতিনিধি আলী সিরাজি বলেন, ‘ইরানে হামলা চালানোর জন্য ইহুদি সরকার হোয়াইট হাউসকে চাপ দিচ্ছে আর হোয়াইট হাউস ধরনের বোকামি করলে পারস্য উপসাগরে অবস্থানরত তেলআবিব যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হবে
২০১০ সালের নভেম্বর মাসে হরমুজ প্রণালিতে প্রথমবারের মতো জঙ্গিদের হামলার শিকার হয় জাপানের একটি তেলবাহী জাহাজ রয়টার্স অবলম্বনে

Saturday, December 24, 2011

মায়া সভ্যতা




মায়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত হচ্ছেন সেইসব মানুষ যারা প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্কৃতির এবং আধুনিক জনগণ, যারা মেক্সিকোর দক্ষিণে এবং উত্তর-মধ্য আমেরিকাতে বসবাস করতো এবং তারা মায়াভাষী় পরিবারের মানুষ। প্রথমদিকে এর সময় কাল প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ২০০০-২৫০ অব্দ পর্যন্ত। এর মধ্যে প্রাচীন কালে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০-৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অনেক মায়া নগরীগুলোতে তাঁরা উন্নতির উচ্চশিখরে পৌঁছেছিল এবং স্প্যানিশদের আগমনের পূর্ব পর্যন্ত পুরো পোস্টক্লাসিক জুড়ে চালিয়ে গিয়েছিল। এটি ছিলো বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ঘন জনবসতি এবং সংস্কৃতিভাবে গতিশীল একটি সমাজ।
উচ্চস্তরের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কারণে এবং সাংস্কৃতিক প্রসারণ করার দরুন অন্যান্য মেসোআমেরিকান সভ্যতার সঙ্গে মায়া সভ্যতাকে অনেক ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন: লেখার উন্নতি-সাধন, গ্রন্থারম্ভে উদ্ধৃত বাক্য এবং বর্ষপঞ্জিকা যা মায়ার সঙ্গে উদ্ভূত হয়নি, তবুও তাঁদের সভ্যতা তাঁদেরকে সম্পূর্ণভাবে বিকশিত করেছিল। হণ্ডুরাস, গুয়াতেমালা, এল সালভাদর এবং যতদূর দেখা যায় মায়া অঞ্চল থেকে ১০০০ কিলোমিটারের (৬২৫ মাইল) চেয়েও বেশি, মধ্যে মেক্সিকোতেও মায়ার প্রভাব লক্ষ করা যায়। এর বাইরেও অনেক মায়া সভ্যতার প্রভাবান্বিত শিল্প এবং স্থাপত্যের খোঁজ পাওয়া যায়, যা বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের চিন্তাধারার ফলস্বরূপ বরং সরাসরি বাহ্যিক জয়। মায়া জনগণ কখনোই অন্তর্ধান হয়নি, প্রাচীনকালেও না, স্প্যানীয় বিজয়ীদের আগমনের সাথেও না, এবং পরবর্তীতে যখন স্প্যানীয়রা আমেরিকা মহাদেশে উপনিবেশ স্থাপন করে তখনও না। আজ, পুরো মায়া অঞ্চল জুড়ে মায়া এবং তাদের বংশধরদের বিস্তার। প্রাচীন কলাম্বিয়ান এবং ভাবতত্ত্বের জয়ের ঐতিহ্য ও ধারণার পাথক্যসূচক একটি সমষ্টির ফলাফল বজায় রাখার অর্ন্তভুক্তি। অনেক মায়াভাষী তাদের প্রাথমিক ভাষা হিসেবে আজও মায়া ভাষায় কথা বলে। রাবিনাল আচি, আচি ভাষায় একটি খেলা লিখেছেন। মায়াকে ২০০৫ সালে ইউনেস্কো মাস্টারপিস অফ দি ওরাল এন্ড ইন্ট্যানজিবল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি হিসেবে ঘোষণা করেছে।

ভৌগোলিক বিবরণ

মায়া সভ্যতার ভৌগোলিক সীমা মায়া অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। মেক্সিকান রাষ্ট্রে গুলোর দক্ষিণে চাপাস, তাবাস্কো এবং ইয়ুকাটান রাষ্ট্রে গুলোর উপদ্বীপের কুইন্টানা রোও, কাম্পেছ এবং ইয়ুকাটান জুড়ে প্রসারিত করেছিল। মায়া এলাকার বিস্তার উত্তরে মধ্যে আমেরিকা অঞ্চলও। বর্তমান গুয়াতেমালা, বেলিজ, এল সালভাডোর এবং পশ্চিমী হণ্ডুরাসের জাতি জুড়ে মায়া সভ্যতা প্রসারিত করেছিল। মায়া অঞ্চলের জলবায়ু অনেক ভাবে পরিবর্তন হয়ে থাকে। নিচু-অবস্থান এলাকা হওয়ার ফলে নিয়মিত প্রবল হারিকেন ঝড় এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের সম্মুখীন হন মরুভূমির যাত্রীরা।
মায়া অঞ্চলকে সাধারণভাবে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে: দক্ষিণ মায়া উচ্চভূমি, দক্ষিণ (অথবা মধ্য) মায়া নিচুভূমি এবং উত্তর মায়া নিচুভূমি। গুয়াতেমালা এবং চাপাস এর অন্তর্ভুক্ত সমস্ত ভূখন্ড দক্ষিণ মায়া উচ্চভূমিতে উন্নত করে। দক্ষিণের নিচুভূমি খোজে পাওয়া যায় উত্তরের উচ্চভূমির কাছে এবং মেক্সিকান রাষ্ট্রে গুলোর কাম্পেছ, কুইন্টানা রোও এবং উত্তর গুয়াতেমালা, বেলিজ এবং এল সালভাডোরের একত্রীত হয়। উত্তরের নিচুভূমি ঢেকে দেয় বাকী ইয়ুকাটান উপদ্বীপ, পুউক পাহাড় গুলো সহ।

ইতিহাস

প্রাচীন যুগ

খ্রীষ্টপূর্ব ১০ম শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে মায়া অঞ্চলে লোক বসবাস করা শুরু করেছিল। বেলিজের কিউল্লোতে মায়া পেশার সাম্প্রতিক আবিষ্কারের কার্বন পরীহ্মা হতে পাওয়া তারিখ অনুযায়ী খ্রীষ্টপূর্ব প্রায় ২৬০০ বছর আগের। এই স্তরটি পেশার স্মৃতিসৌধের কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করেছিল। মায়ার বর্ষপঞ্জিকা তথাকথিত মেসআমেরিকানর দীর্ঘ গণনীয় বর্ষপঞ্জিকার উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, যাহা একটি সমতুল্যে তারিখ খ্রীষ্টপূর্ব ১১ আগষ্ট ৩১১৪ তে শুরু হয়। যাইহকো, "গ্রহণযোগ্য ইতিহাস" অনুসারে প্রথম পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায় “মায়া” উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রশান্তীয় উপকূলের সোকোনুসকো অঞ্চলে, ১৮০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে বলে অনুমান করা হয়। এই পর্যায়কালটি, প্রেক্লাসিক হিসেবে জানা হয়েছিল। তাকালিক আবাজ, গুয়াতেমালার প্রশান্তীয় ঢালে, একমাত্র জায়গা যেখানে ওলমেক এবং তারপর মায়া বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। প্রাচীন কালের (সি. ২৫০-৯০০ এ.ডি.), সাক্ষী ছিল দাড়িয়ে থাকা বড় পর্যায় নির্মাণ,নাগরায়ন এবং স্মৃতিস্তম্ভের উৎকীর্ণলিপির তালিকা গুলো। একটি পর্যায়কালে লহ্মণীয় বুদ্ধিগত এবং শিল্পসম্মত উন্নতিসাধন হয়েছিল বিশেষভাবে দক্ষিণের নিচুভূমি অঞ্চলে। তারা কৃষির দিক দিয়ে তীব্র বিকশিত হয়েছিল এবং শহর-কেন্দ্রীয় সাম্রাজ্যে গঠিত হয়েছিল অনেক স্বাধীন শহর-অবস্থা। এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে সুপরিচিত নগরী তিকাল (ইৎসা মায়া ভাষা: Tik'al তিক'আল্‌), Palenque, Copán এবং Calakmul কে, কিন্তু এগুলো ছাড়া আরও আছে যা অল্প পরিচিত এদের মধ্যে ডস পিলাস, Uaxactun, Altun Ha এবং Bonampak নগরী। প্রাচীন উপনিবেশ বন্টনের আগে উত্তর মায়া নিচুভূমি গুলো দক্ষিণ অঞ্চলের ভূমির মত পরিষ্কার ভাবে জানা ছিল না কিন্তু অন্তর্ভুক্ত ছিল একটি সংখ্যক কেন্দ্রীয় জনসংখ্যার, যেমন Oxkintok, Chunchucmil এবং Uxmal এর ও আগের। মায়া সভ্যতার লোকেরা অন্যান্য মেসাআমেরিকান সংস্কৃতির লোকদের সাথে অনেকে দূরত্বীয় বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করতো, এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল তেওতিউয়াকান (নাউয়াত: Teōtīhuacān), সাপোতেক (Zapotec) এবং অন্যান্য দল কেন্দ্রীয় ইউরোপে এবং মেক্সিকোর উপসাগরীয় কূলে ও যেত, যেমন Tainos এর ক্যারিবীয় অঞ্চলে। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সামগ্রী গুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল কাকাও, লবণ, সাগর শেল, এক প্রকার পাথর এবং কালো রঙের কাচের মতো আগ্নেয় শিলা।

মায়ার ধ্বংস

মায়ার ধ্বংসের কারণ নিয়ে এখনও বিতর্ক হয়ে থাকে, ৮ম এবং ৯ম শতকের দিকে মায়ার কেন্দ্রগুলো দক্ষিণের নিচু ভূমিতে হ্ময় প্রাপ্ত হয়েছিল এবং তারপর সল্প সময় মধ্যে ত্যাগ করা হয়েছিল। এই হ্ময়টির স্মৃতিসৌধের উৎকীর্ণলিপির গুলো এবং বড় পর্যায় স্থাপত্য নির্মাণের একটি বিরতি সঙ্গে জোড়া দেওয়া হয়েছিল। যদিও এই তত্ত্বর কোন সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য "অবসাদ" ব্যাখ্যা নেই, বর্তমান তত্ত্ব সমূহকে দুই শ্রেণীবিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে: প্রাকৃতিক এবং অপ্রাকৃতিক।
অপ্রাকৃতিক তত্ত্ব সমূহে মায়ার ধ্বংস কতিপয় নিন্ম শ্রেণীগুলোতে ভাগ করা হয়, যেমন অত্যাধিক জনসংখ্যা, বিদেশী আক্রমণ, কৃষকদের বিদ্রোহ এবং মূখ্য বাণিজ্য গমনপথের ভেঙ্গে পড়া। আর প্রাকৃতিক তত্ত্ব সমূহে অনুমান হয় পরিবেশ সংক্রান্ত বিপর্যয়, সংক্রামক রোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে অন্তর্ভুক্ত করে। প্রমাণ আছে যে মায়ার জনসংখ্যা নিঃশেষ কৃষিবিষয়ক কার্যকরসহ পরিবেশের ধারন করার ক্ষমতা অতিক্রম করেছিল এবং megafauna এর শিকার হয়েছিল। সাম্প্রতিক কালে কিছু গবেষকদের মতবাদ ছিল যে ২০০ বছরের অনাবৃষ্টির মাঝে পড়াতে মায়া সভ্যতার ভেঙ্গে গিয়েছিল। অনাবৃষ্টি তত্ত্ব উদ্ভূত হয়েছিল ভৌত বিজ্ঞানী্র বিশ্লেষনের মধ্যে থেকে যারা "লেক বেডস" গুলো পড়ছিল, প্রাচীন পরাগায়ণ এবং অন্যান্য তথ্য, প্রত্নতাত্ত্বিক সম্প্রদায় থেকে না।

প্রাচীন মধ্যযুগ

পোষ্টক্লাসিকের সফলতার সময় কালে (১০ম থেকে ১৬ শতকের আগে), উত্তরীয় কেন্দ্রগুলোতে উন্নতিসাধন এবং বাহ্যিক প্রভাব দ্বারা এর বৈশিষ্ট্যরে বৃদ্ধির একটি বিভেদ হয়েছিল। অনেক শতাব্দীর ধরে মায়া নগরীর উত্তরের নিচুভূমির "Yucatán" তে উন্নতি লাভে চালিয়ে গিয়েছিল; এই যুগে গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলো ছিল চিচেন ইৎসা (Chichen Itza), উশমাল (Uxmal), Edzná এবং Coba। চিচেন ইৎজা এবং উশমাল এর রাজবংশের শাষকদের অবনতি লাভের পরে, ১৪৫০ তে একটি বিদ্রোহর আগে পর্যন্ত মায়াপেন বা আধুনিক মায়ার সমস্ত অঞ্চল ইউকাতান শাসন করেছিল। (এই শহরটির নামের উৎস "মায়া" শব্দ থেকে আসতে পারে, যেটির অর্থ আরও সীমাবদ্ধ ছিল ভৌগোলিকভাবে ইউকাটেক তে, স্পেনিসদের ঔপনিবেশিক এবং বর্তমান ১৯তম এবং ২০তম শতকে এর অর্থ কেবল বৃদ্ধি করেছে)। অঞ্চলটি তারপর প্রতিযোগিতায় করায় শহরের অবস্থা অবনতি হয়েছিল যে পর্যন্ত না স্পেনিসরা ইউকাতান জয় করে ছিল।

ঔপনিবেশিক সময়

সল্প সময় পরে স্পেনিসদের প্রথম অঞ্চলিক অভিযান গুলোতে মায়া জয় লাভের বিভিন্ন প্রচেষ্টা আরম্ভ করেছিল। মায়া রাজ্যের ইউকাতান উপদ্বীপের এবং গুয়াতেমালা উচ্চভূমিতে একটি ঔপনিবেশিক স্থাপনা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই সাময়িক অভিযানকে কখনও কখনও বলা হতো "ইউকাতানে স্পেনিসদের জয় লাভ," হতে পারে এটা একটি সুদীর্ঘ প্রমাণ এবং প্রথম থেকেই জয়কারীদের জন্য বিপজ্জনক অনুশীলন। স্পেনিসদের আসার পূর্বে সমস্ত মায়া জমির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করতে প্রায় ১৭০ বছর লেগেছিল। Tayasal এর Itza এবং Zacpeten এর Ko'woj, শেষ মায়া শহর গুলোর শাসন ব্যবস্তা অবিরামভাবে দখল করা হয়েছিল এবং ১৭তম5 শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত স্পেনিসদের থেকে স্বাধীন ছিল। পরিশেষে তারা ১৬৯৭ সালে স্পেনিসদের কাছে পরাজিত হয়।

স্থাপত্য

সাধারণত মায়া নাগরায়ণ শহরের মধ্যে খুজে পাওয়া যায় নাগরিক এবং ধর্মীয় স্মৃতিসৌধ, মন্দির, কোর্ট এবং মিটিং এর বাসস্থান, প্রান্তে গ্রামগুলো এবং কৃষকদের বাড়ী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। টিকাল বৃহত্তম কিন্তু নিশ্চিতভাবে পুরনো শহর ছিল না, যদিও কেউ মনে করে El Mirador মত কেন্দ্রগুলোকে এবং অতি প্রাচীন কেন্দ্রগুলোকে বর্তমান বেলিজ অথবা এমনকি Kaminaljuyu গুয়াতেমালাকে। তাদের নাগরিক এবং ধর্মীয় মধ্যের প্রায় ২ বর্গকিমি একটি অঞ্চল ছিল, ক্ষুদ্রতর শহরটি ২ অথবা ৩ মাইলের একটি ব্যাসার্ধের ওপর প্রসারিত হয়েছিল। রাজত্ব করেছিল ৫ মন্দির পিরামিড, সব চেয়ে বড়টির উচ্চতা ছিল ৭৫ মিটার। তারপর Copán ছিল, মায়া বিশ্বের আলেকজান্দ্রিয়া স্থানটি একটি ভূল অর্থ করার দরুন, দীর্ঘ সময়ের জন্য বিশ্বাস করা হয়েছিল যে বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীর একটি মিটিং এর প্রতিনিধিত্ব করতো, যখন পরে চেনা হয়েছিল শহরের শাসদের তালিকা হিসেবে, Chichen Itza, Yucatan এর পবিত্র শহর যেটি তীর্থযাত্রীরা অগ্রসর হয়েছিল সম্মানের সঙ্গে, একটি বড় প্রাকৃতিক কূপ ছিল, মানবিক উৎসর্গের স্থান। শহরের ছায়াতে ছিল ভুট্টা, সবকিছু যা তারা করতো এবং যা তারা বিশ্বাস করতো, ভুট্টার সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ছিল। মন্দির এবং উৎসর্গ গুলো তাদেরকে অধিক শস্যর নিশ্চিতকরণের কাজ ছিল, সম্প্রসারিত ধর্মতৎ প্রসন্নতা সম্পাদনের একটি হাতিয়ার ছিল, কিন্তু ফল গুলোর বীজেরও; বর্ষপঞ্জিকার সময় মাঠে কাজের ভিত্তি ভাগ করা হয়েছিল। মায়ান নগরীতে উৎসবের দিনে সব জেলা জুড়ে প্রবাহিত ছিল প্রথা গুলোতে উপস্থিত থাকার, প্রগতির যাত্রার, দাঁড়িয়ে থাকা চারা গাছগুলোর, বল খেলার, কর প্রদান করার এবং তারপর হিনটারলেন্ড এর তাদের আরামদায়ক কামরা-ঘরে যেত। মায়ান স্থাপত্যে বাকে ফিরে আসছে, এইটি সম্পূর্ণরূপে স্বদেশজাত মনে হতো, কিন্তু অনেক পন্ডিত অনুমান করে যে এইটি এশিয়া সভ্যতার স্পর্শ দ্বারা কিছুটা প্রভাবিত ছিল।

অঙ্কন

অনেকেই বিবেচনা করে মায়া শিল্প প্রাচীন যুগের (সি. ২৫০ থেকে ৯০০ এ.ডি.), প্রাচীন নতুন বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সফিস্টিকেট এবং সুন্দর শিল্প হইবে। অতীতের অনেক সভ্যতার মত, মায়ার জনগণরা অন্যান্য কেন্দ্রীয় আমেরিকার লোকদেরমত ভাস্কর্য এবং রঙিন ভবন ব্যবহার করার বৈশিষ্ট্য ছিল। বিভিন্ন মন্দিরের কবর গুলোর ভিতর কম্পন সজ্জিত এবং প্রাসাদ গুলোতে খাটি গাঢ় লাল, মেঝেতে নীল। বিষয়বস্তু: গায়করা, নর্তকীরা, মহিলাদের ছাতার সঙ্গে সেবীকা যারা পাখির পালকের দিয়ে ঢাকা ছিল, জলজ প্রাণী বৈশিষ্ট মুখোস, উৎসবের ধর্মযাজকরা এবং প্রভুরা, শাসনকর্তারা এবং মহৎ উদার হ্মমতা সম্পূর্ণ শহর গুলোর, মহিলা নাপিতদের, দেবতার মুখোস, যুদ্ধারা, জীবন থেকে মৃত্যুতে পরিবর্তনের, জয়লাভ উদযাপনের, ধর্মের প্রথাপদ্ধতি গুলোর, হিংসার এবং মানবিক উৎসগের দৃশ্য, সাপের, জাগুয়ারের। সর্বাপেক্ষা এক লক্ষণীয় মায়ার শিল্পসম্মত দানের, দ্বিধা ছাড়া আঁকা নির্দিষ্ট বক্রতা, একটি ধারণা প্রসুত যে অনেক দৃশ্যতে এশিয়ার অঙ্কন। প্রাচীন কালে ৫৫০-৯০০ এ.ডি. এর মধ্যে ভাস্কর্য বিকশিত হয়েছিল কোন বাহ্যিক প্রভাব ব্যতীত, এবং খুব সচ্ছল ছিল। আমাদের কেবল প্রাচীন মায়ার উন্নতির আভাসের চিত্র রয়েছে; বেশির ভাগ যা মৃত্যুর পরও বেচে থেকেছে এবং অন্যান্য মায়া মৃৎশিল্প, এবং (Bonampak) তে একটি ভবনের প্রাচীন দেওয়াল গুলোতে অঙ্কন ধরে রেখে সুযোগে বেচে থেকে ছিল। একটি সুন্দর বৈষর্য নীল রং যে শতকের মধ্য দিয়ে বেচে থেকেছে তার এক রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের দরুন যা মায়া নীল অথবা Azul maya হিসেবে জেনেছে, এবং এইটি বৃদ্ধমান Bonampak, Tajín Cacaxtla, Jaina তে এবং এমনকি কিছু ঔপনিবেশিক আশ্রমে। মায়া নীলের ব্যবহার কার্যকরী থেকে ১৬ শতক পর্যন্ত যখন কৌশলটি হারিয়ে যায়।

জ্যোতির্বিদ্যা

বৈশিষ্ট্যযুক্তভাবে, সেখানে কিছু প্রমাণ আবির্ভূত হয় যা মায়াকে মনে হয় কেবল অদ্বিতীয় প্রে-টেলেস্কোপিক সভ্যতা যাদের ওরিয়ন নীহারিকার (Orion Nebula) অস্পষ্ট জ্ঞান দেখা যায়, যা একটি পিন-পয়েন্ট নাহ্মত্রিকা না। তথ্যটি যে তত্ত্বটি ধরে রাখে তা আসে লোকদের একটি গল্প থেকে, সে আকাশের ওরিয়ন তারামণ্ডলীর অঞ্চলের দেখা-শোনা করতো। তাদের ঐতিহ্যবাহী ঘর একটি ঝাপসা দাগসহ উত্তপ্ত আগুনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত যা ওরিয়ন নীহারিকার অনুরুপ। এইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র ধারণা সমর্থন করে যা দূরবীক্ষণ আবিস্কারের পূর্বে মায়ারা আকাশের তারকার একটি পরিব্যাপ্ত অঞ্চল পিন-পয়েন্টতে সনাক্ত করেছিল।
মায়ারা জ়েনিয়াল প্রস্থান গুলোতে খুব কৌতূহলী ছিল, যখন সূর্য সরাসরিভাবে মাথার উপর দিয়ে যায়। তাদের নগরীর বেশির ভাগ অক্ষাংশ কর্কটক্রান্তির নিচে হওয়ায, এই প্রকৃত প্রস্থান গুলো নিরহ্মরেখার উপর থেকে সমান দূরত্ব এক বছরে দুইবার ঘটাবে। সূর্য মাথার উপরের এই অবস্থানটি প্রতিনিধিত্ব করতে, মায়ার একটি দেবতা ছিল যার নাম দেবতা ডাভিইং (Diving God)।
ড্রেসডেন কোডেক্স (Dresden Codex) ধারণ করে উচ্চতম ঘনত্বের জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক পর্যবেক্ষণ এবং যে কোন জীবন্ত বিষয় সমূহ নির্ণয় করে (এইটি আবির্ভূত হয় যে এই কোডেক্সতে তথ্য মূলত অথবা আসলে একটি প্রকৃতির জ্যোতির্বিদ্যা)। এই কোডেএক্সের পরীক্ষা এবং বিশ্লেষণে প্রকাশ করে যে শুক্রের জ্যোতির্বিদ্যা মায়ার কাছে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, এমনকি সূর্যের চেয়ে তাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

গণিত

মেক্সিকানের অন্যান্য সভ্যতা গুলোর সাথে মায়া সভ্যতার মিল হলো, মায়া ব্যবহার করতো একটি ২০ ভিত্তি সংখ্যা (vigesimal) এবং ৫ ভিত্তি সংখ্যা (মায়া সংখ্যা দেখুন) পদ্ধতি। তা ছাড়াও, প্রেক্লাসিক মায়া এবং তাদের প্রতিবেশীদের ৩৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে শূন্যের ধারণা স্বাধীনভাবে ক্রমবিকাশিত করেছিল। তাদের লেখা হতে বুঝা যায় যে তারা কাজ উপর ভিত্তি করে লাক্ষ লাক্ষ অংকের হিসাব করতো এবং তারিখ গুলো এতো বড় হতো যে তা শুধু লিখতে অনেক লাইনের দরকার হবে। তারা খুব নির্ভূল ভাবে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ করেছিল; তাদের নকশায় চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহগুলোর পর্যায়কাল সমান অথবা অন্যান্য সভ্যতার খালি চোখে পর্যবেক্ষকগণদের থেকে উন্নত ছিল।
মেক্সিকানের অন্যান্য সভ্যতা গুলোর সাথে মায়া সভ্যতার আরও মিল হলো, মায়া সঠিক এবং নির্ভুলতার সাথে সৌর বছরের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করেছিল। ইউরোপীয়নরা যে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার করতো তার চেয়েও অনেক বেশি সঠিক এবং নির্ভুল ছিল। যাইহোক; তারা যে অপরিণত বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার করেছিল, এটি ভিত্তি করা হয়েছে এক বছর যথাযথভাবে ৩৬৫ দিন, এর অর্থ এই যে বর্ষপঞ্জিকা প্রতি চার বছরে এক দিন বৃদ্ধি পায়। জুলিয়ান বর্ষপঞ্জিকা ব্যবহার হতো ইউরোপে রোমানদের সময় থেকে ১৬ শতাব্দীর শুরু পর্যন্ত। প্রতি ১২৮ বছরে কেবল এক দিনের ত্রুটি জড়িত হয়েছিল। আধুনিক গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিকা আরও বেশি নির্ভূল, প্রায় ৩২৫৭ বছরে কেবল এক দিনের ত্রুটি জড়িত হচ্ছে।

সময়

অতীতের একটি অপরিবর্তনীয় বিন্দু থেকে মায়ার ইতিহাস গণনা করা হয়েছিল। যেমন, খ্রীষ্টান ধর্মের অংশ হচ্ছে যিশুর জন্ম, গ্রিকের প্রথম অলিম্পিক গেমস এবং রোমান সাম্রাজ্যের জন্মের রোম থেকে। তাদের বর্ষপঞ্জিকার একটি তারিখ নির্দিষ্ট করা হয়েছে (দীর্ঘের পরিমাণ), অনুবাদ করা হয়েছিল ৩১১৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ হিসেবে, সম্ভবত পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একটি কাল্পনিক ঘটনাতে যেমন একটি ভীষণ বিপর্যয়ের পরে একটি নতুন বিশ্বের সৃষ্টি। খ্রীষ্টান যুগের আগের শতক থেকে, তাদের পুরোহিত জ্যোতির্বিজ্ঞানী নির্ভুলতার সঙ্গে চন্দ্র, সূর্যের গ্রহণ এবং শুক্রের কহ্ম পথ সম্পূর্ণভাবে নির্দিষ্ট করতে পারতো।

বর্ষপঞ্জিকা

K'in হল মায়া বর্ষপঞ্জিকার একটি সময় যা একটি দিনের অনুরুপ; আর উইনাল (মাস) হল মায়া বর্ষপঞ্জিকার একটি চক্র যা ২০ দিনের একটি পর্যায়কাল সংশ্লিষ্ট হয়। ১৮ উইনাল হল ১ হাব (বছর) এর একটি চক্র যা ৩৬০ দিন বুঝায়। এগুলোর সাথে যোগ করা হয়েছিল ৫ দিন যা ওয়েব ডাক হতো। এই ৫ দিনকে তারা বিশেষভাবে অমঙ্গলজনক হিসাবে বিবেচনা করা হতো। এই ৫ দিন যোগ করে ৩৬৫ দিনের একটি বর্ষপঞ্জিকার ঋতু চক্রে সংযোগ করা হয়েছিল। বর্ষপঞ্জিকা গঠন করা হয়েছিল ২০ দিনের ১ "মাস" আর ১৯ মাসে ১ বছর। মাসগুলোর নাম হলঃ
#মাসঅর্থ
Popমাদুর
Woকাল যুক্তাক্ষর
Sipলাল যুক্তাক্ষর
Sotz'বাদুড়
Sek ?
Xulকুকুর
Yaxk'inনতুন সূর্য
Molজল
Ch'enকাল ঝড়
১০Yaxসবুজ ঝড়
১১Sakসাদা ঝড়
১২Kehলাল ঝড়
১৩Makপরিবেষ্টিত
১৪K'ank'inহলদে সূর্য
১৫Muwanপেঁচা
১৬Paxগাছ লাগানোর সময়
১৭K'ayab'কচ্ছপ
১৮Kumk'uশস্যভান্ডার
১৯Wayeb'অমঙ্গলজনক ৫ দিন