Showing posts with label Unlimited opportunity for Bangladesh. Show all posts
Showing posts with label Unlimited opportunity for Bangladesh. Show all posts

Wednesday, February 15, 2012

বাংলাদেশের সম্ভাবনা অসীম: রবার্ট ব্লেক


জাতি হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অসীম। এ দেশের তরুণেরাও অনেক বেশি সক্রিয়। একজন ব্যক্তির পক্ষে কত কী করা সম্ভব, তা অনেক বাংলাদেশিই দেখিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ব্লেক গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সভায় এ কথা বলেন। মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডির বাংলাদেশ সফরের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সফরের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর আমেরিকান স্টাডিজের (বিএএএস) সঙ্গে যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকার আমেরিকান সেন্টার।
সভায় রবার্ট ব্লেক বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য কেনেডির জোরালো সমর্থনের কারণেই দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য কেবল সরকারই নয়, ব্যক্তিও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে বলে বিশ্বাস করতেন কেনেডি। অনেক বাংলাদেশিও সারা বিশ্বকে সেটি করে দেখিয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষুদ্রঋণের পথ সুগম করেছেন। এটা লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য দূর করেছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন হয়েছে। জাভেদ করিম ইউটিউবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ইজাজ আহমেদ ইয়ুথ লিডারশিপ প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের তরুণদের নেতৃত্ব দিতে সহায়তা করছেন। করভি রাখশান্দ ‘জাগো’ প্রতিষ্ঠা করে বস্তির শিশুদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দিচ্ছেন। এমন অনেক উদাহরণ আছে। এভাবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে একজন ব্যক্তির পক্ষে কী কী করা সম্ভব।
রবার্ট ব্লেক বলেন, তরুণ বাংলাদেশিরা সৃষ্টিশীল কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। সক্রিয় নাগরিক সমাজ ও স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্যও বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশ অনেক বিষয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে, যা থেকে বিশ্ববাসীর অনেক কিছু শেখার আছে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেন, ‘৪০ বছর আগের কথা চিন্তা করুন। এ জাতির জন্মের যখন দুই মাসও হয়নি, সর্বত্র যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ, তখন সিনেটর কেনেডি বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।’ তিনি বলেন, গত ৪০ বছরে বাংলাদেশ কেবলই এগিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার মতো এমন অনেক অর্জন আছে এ দেশের।
এরপর মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এবার আসুন, আমরা পরবর্তী ৪০ বছরের কথা বলি। আমি আমার জীবদ্দশায় দেখে যেতে চাই, বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ হিসেবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে। এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে দেশ এই অঞ্চল ও এর বাইরে শান্তি ও স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকার রাখবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৯৭১ সালে সিনেটর কেনেডি বাংলাদেশের গণহত্যার প্রতিবাদ করেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই এসে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আট হাজার শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। একটি বটগাছ রোপণ করেন। সেই বটগাছটি আজ বৃক্ষে পরিণত হয়েছে।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পরপরই অনেক প্রভাবশালী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল না। কিন্তু কেনেডি সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে ছিলেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএএএসের সভাপতি এ কে এম নূরুন নবী, আমেরিকান সেন্টারের পরিচালক লরেন লভলেস, মুক্তিযুদ্ধ জাদঘুরের ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরী, সিপিবির ফেলো রওনক জাহান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবদুল মোমিন চৌধুরী।
সভা থেকে ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড আর্টস প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এই সেন্টার তরুণদের নেতৃত্ববিষয়ক কর্মশালা ও পেশাদারি উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ, যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার জন্য দিকনির্দেশনা ও বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ, জনসেবা, শিল্পকলাবিষয়ক ধারণা বিনিময়ের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।