ছবি হীরক রাজার দেশে। হীরকের রাজা ও তাঁর গবেষক এরপর এখন কিংবদন্তি। আর
ছবিটিও যেন সব সময় আধুনিক এবং সব কালের সব শাসকদের বিরুদ্ধে এক নীরব
প্রতিবাদ। তারই আদলে সত্যজিৎ রায়ের ছবির চরিত্রগুলো ঠিকঠাক রেখে শুধু সময়ের
ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে সেই ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো কেমন আচরণ করত, তাই কল্পনা
করা হয়েছে। লিখেছেন তাওহিদ মিলটন
রাজা: কী গবেষক, আছো কেমন?
তা দেখা নাই কত দিন?
গবেষক: নমস্কার, হীরকের রাজা মহান
এই তো হবে দু-চার দিন!
রাজা: তা জনগণ আছে কেমন
কেউ কি কিছু কয়?
গবেষক: কওনের মতো কিছু আছে নাকি
ঢুকিয়ে দিয়েছি গুমের ভয়,
সব কটার এখন মুখে কুলুপ
যা সওয়াবেন তাই সয়।
রাজা: আহা বেশ বেশ, এটাই তো চাই!
গবেষক: জি জনাব, এই তো করি গবেষণায়!
রাজা: দেশের জনগণ কী করে রাতে
ঘুমায় না জেগে থাকে তাহারা?
গবেষক: আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন,
আপনি তো আর দিবেন না ওদের বেডরুম পাহারা!
রাজা: তা গবেষক এবার শোনাও দেখি
নতুন কী হলো আমার রাজ্যে!
গবেষক: আপনার এক মন্ত্রী ঘুষের টাকা নিয়ে
ধরা খেয়েছে গাড়ির ড্রাইভারের সাহায্যে!
মন্ত্রী সাহেব ভেবেছিলেন ধরবেন কালো বিড়াল,
নিজেই এখন বিড়াল সাজলেন, সবই হলো আড়াল।
রাজা মশায় আপনি বড়ই মহান,
আপনার লোকজন সবাই ভাগজোক করে খান।
রাজা: তাহলে কিছু বলো!
গবেষক: আমাদের রাজা মহৎ প্রাণ
যাহা পান তাহাই খান।
রাজা: বেশ বেশ! তা চলছে কেমন দেশ?
বলো কী খবর এনেছ বৃত্তান্ত সবিশেষ!
গবেষক: দেশ নিয়ে ভাবতে হবে না অত!
সমাবেশে দেখেন না মানুষ আসে কত!
রাজা: তা দেশের যোগাযোগের কী অবস্থা
মানুষজন কি এখন আর কিছু কয়?
গবেষক: নাহ! কওয়ার মতন কি কিছু আছে মহাশয়
এমনভাবে কেটেকুটে রেখেছি, এখন তো হেঁটে পার হয়!
রাজা: খুনখারাবি কি হয়েছে বন্ধ?
গবেষক: রাজা মশায় কি হয়েছেন অন্ধ!
এসব কি বন্ধ হওয়ার বিষয়?
এই সব বন্ধ হলে চলবে কী করে সিংহাসন!
রাজা: খাঁটি কথা, হয়েছে যখন দেশের জনগণ
সইতে তো হবেই রাজাদের এইটুকু প্রহসন।
কী ঠিক কি না?
গবেষক: ঠিক ঠিক।
রাজা: তা বিদ্যুৎ নিয়ে সবাই নাকি অসন্তুষ্ট
দিনেও নাকি বিদ্যুৎ যায়, জনগণ ভীষণ রুষ্ট!
গবেষক: তাতে আপনার কি, আপনি তো আছেন এসিতে
মাস শেষে বিল হবে ওদের, না দিলে কাটা যাবে কাঁচিতে!
রাজা: বিদ্যুতের বরাদ্দও নাকি চুরি করে খেল?
গবেষক: তাতে কী-ই বা এসে গেল!
রাজা: তা বিচার-টিচার কি কিছু হচ্ছে?
নাকি অপরাধীরা পার পাচ্ছে বিচারকের ভুলে,
গবেষক: ছিঃ ছিঃ বিচারক তো রাজা মশায় আপনি নিজেই
হচ্ছে কিছু বিচার, কিছু রেখেছি নির্বাচনের জন্য তুলে!
রাজা: সেকি, অপরাধী না ঝুলিয়ে, ঝুলিয়ে রেখেছ বিচারকার্য
দাতাগোষ্ঠীদের বিশ্বাস করাতে পারবা তো এটা একটা রাজ্য!
গবেষক: ওসব আমার ওপর ছেড়ে দিয়ে
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যান বিছানায়,
আপনার নিমক যখন খেয়েছি
উপায় একটা বের করব গবেষণায়।
রাজা: এই নাও গবেষক, এটা তোমার উপহার
তুমি আছো বলেই আমি আজও এই রাজ্যের রাজা!
গবেষক: ছিঃ ছিঃ আর লজ্জা দিবেন না মহাশয়,
যা দেবেন মাথা পেতে নিব উপহার কিংবা সাজা!
রাজা: সবাই যদি হতো তোমার মতো অনুগত?
গবেষক: কী যে ভালো হতো!
না হলেও ক্ষতি কিছু নাই,
রাজা ও গবেষক: আছে না মগজ ধোলাই।
রাজা: বেশ বেশ, আজ তবে যাই গবেষক
দেখা হবে অন্য কোনো দিন।
গবেষক: আপনি অতি মহান রাজা
আপনার কাছেই আমার যত ঋণ।
রাজা: কী গবেষক, আছো কেমন?
তা দেখা নাই কত দিন?
গবেষক: নমস্কার, হীরকের রাজা মহান
এই তো হবে দু-চার দিন!
রাজা: তা জনগণ আছে কেমন
কেউ কি কিছু কয়?
গবেষক: কওনের মতো কিছু আছে নাকি
ঢুকিয়ে দিয়েছি গুমের ভয়,
সব কটার এখন মুখে কুলুপ
যা সওয়াবেন তাই সয়।
রাজা: আহা বেশ বেশ, এটাই তো চাই!
গবেষক: জি জনাব, এই তো করি গবেষণায়!
রাজা: দেশের জনগণ কী করে রাতে
ঘুমায় না জেগে থাকে তাহারা?
গবেষক: আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন,
আপনি তো আর দিবেন না ওদের বেডরুম পাহারা!
রাজা: তা গবেষক এবার শোনাও দেখি
নতুন কী হলো আমার রাজ্যে!
গবেষক: আপনার এক মন্ত্রী ঘুষের টাকা নিয়ে
ধরা খেয়েছে গাড়ির ড্রাইভারের সাহায্যে!
মন্ত্রী সাহেব ভেবেছিলেন ধরবেন কালো বিড়াল,
নিজেই এখন বিড়াল সাজলেন, সবই হলো আড়াল।
রাজা মশায় আপনি বড়ই মহান,
আপনার লোকজন সবাই ভাগজোক করে খান।
রাজা: তাহলে কিছু বলো!
গবেষক: আমাদের রাজা মহৎ প্রাণ
যাহা পান তাহাই খান।
রাজা: বেশ বেশ! তা চলছে কেমন দেশ?
বলো কী খবর এনেছ বৃত্তান্ত সবিশেষ!
গবেষক: দেশ নিয়ে ভাবতে হবে না অত!
সমাবেশে দেখেন না মানুষ আসে কত!
রাজা: তা দেশের যোগাযোগের কী অবস্থা
মানুষজন কি এখন আর কিছু কয়?
গবেষক: নাহ! কওয়ার মতন কি কিছু আছে মহাশয়
এমনভাবে কেটেকুটে রেখেছি, এখন তো হেঁটে পার হয়!
রাজা: খুনখারাবি কি হয়েছে বন্ধ?
গবেষক: রাজা মশায় কি হয়েছেন অন্ধ!
এসব কি বন্ধ হওয়ার বিষয়?
এই সব বন্ধ হলে চলবে কী করে সিংহাসন!
রাজা: খাঁটি কথা, হয়েছে যখন দেশের জনগণ
সইতে তো হবেই রাজাদের এইটুকু প্রহসন।
কী ঠিক কি না?
গবেষক: ঠিক ঠিক।
রাজা: তা বিদ্যুৎ নিয়ে সবাই নাকি অসন্তুষ্ট
দিনেও নাকি বিদ্যুৎ যায়, জনগণ ভীষণ রুষ্ট!
গবেষক: তাতে আপনার কি, আপনি তো আছেন এসিতে
মাস শেষে বিল হবে ওদের, না দিলে কাটা যাবে কাঁচিতে!
রাজা: বিদ্যুতের বরাদ্দও নাকি চুরি করে খেল?
গবেষক: তাতে কী-ই বা এসে গেল!
রাজা: তা বিচার-টিচার কি কিছু হচ্ছে?
নাকি অপরাধীরা পার পাচ্ছে বিচারকের ভুলে,
গবেষক: ছিঃ ছিঃ বিচারক তো রাজা মশায় আপনি নিজেই
হচ্ছে কিছু বিচার, কিছু রেখেছি নির্বাচনের জন্য তুলে!
রাজা: সেকি, অপরাধী না ঝুলিয়ে, ঝুলিয়ে রেখেছ বিচারকার্য
দাতাগোষ্ঠীদের বিশ্বাস করাতে পারবা তো এটা একটা রাজ্য!
গবেষক: ওসব আমার ওপর ছেড়ে দিয়ে
নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যান বিছানায়,
আপনার নিমক যখন খেয়েছি
উপায় একটা বের করব গবেষণায়।
রাজা: এই নাও গবেষক, এটা তোমার উপহার
তুমি আছো বলেই আমি আজও এই রাজ্যের রাজা!
গবেষক: ছিঃ ছিঃ আর লজ্জা দিবেন না মহাশয়,
যা দেবেন মাথা পেতে নিব উপহার কিংবা সাজা!
রাজা: সবাই যদি হতো তোমার মতো অনুগত?
গবেষক: কী যে ভালো হতো!
না হলেও ক্ষতি কিছু নাই,
রাজা ও গবেষক: আছে না মগজ ধোলাই।
রাজা: বেশ বেশ, আজ তবে যাই গবেষক
দেখা হবে অন্য কোনো দিন।
গবেষক: আপনি অতি মহান রাজা
আপনার কাছেই আমার যত ঋণ।
(প্রথম আলো, তারিখ: ২৩-০৪-২০১২ -থেকে সংগৃহীত - গল্পের সাথে কিছু বাস্তবতা থাকায় নিজের ব্লগে রেখে দিলাম...।)
No comments:
Post a Comment